Dear Nana,
The following is the bengali translation of your original story "The Ivory Comb"
সেই হাতির দাঁতের চিরুনীটা
বিস্তৃত হাইওয়ে ।দূর থেকে একটি সাদা গাড়িকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় ।এই A.C. গাড়িতে বসে Lofez মিউজিক শুনতে শুনতেও Randy Ankalam ভীষণ বিরক্ত। Randy Ankalam নামটি শুনে মনে হতে পারে যে মানুষটি বিদেশী, কিন্তু না তিনি জন্মসূত্রে ভারতীয়। তার আসল নাম Rama Krishna । বহুদিন যাবত America-এ বসবাস কালীন তিনি যে engineering firm-এ কর্মরত ছিলেন সেখানকার ঊর্ধ্বতন সাদাচামড়ার কর্তৃপক্ষ জিভের আড়ষ্টতার দরুন তার নামের এই অপভ্রংশ ঘটিয়েছেন। তবে শুধু নামেই নয় বিদেশে বসবাস করার ফলে তার মানসিকতার ও যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে।
সেই বৈদেশিক পরি-পাট্য মোড়া rama krishna ভারতের রাস্তাঘাট,পরিবেশ,জল,খাবার সব কিছু নিয়ে ভীষণ বিরক্ত ছিল। এত দামী গাড়ীতে বসেও খানা খন্দে ভরা রাস্তার জন্য ক্লান্তিতে তার শরীর অসাড় হয়ে আসে। এ যদি America হত সেখানকার four-lane বা six-lane এ ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে তার লাল sports car টা নিয়ে যখন ঘুরতো তখন ক্লান্তি তার ধারেকাছে ঘেঁসতে পারতোনা। অথচ আজ সে নিরুপায় নিজের প্রতিশ্রুতির কাছে। এই মাঘা পূর্ণিমার মত শুভ দিনে এই শুভ কাজটা সম্পূর্ণ করতেই তাকে ভারতে আসতে হল। কিন্তু Sreekakulam যাওয়ার রাস্তাটা যে এত খারাপ হবে সে কল্পনাও করেনি। এসব ভারতেই সম্ভব।
অবশেষে সে Sreekakulam জেলায় পৌছয়। এত কষ্টকর যাত্রা,ক্লান্তিতে তার গলা শুকিয়ে আসে। Driver-কে বলাতে সে রাস্তার ধারের একটা দোকানের সামনে গাড়ীটা দাঁড় করায়। গাড়ী থেকে নেমে Rama Krishna দোকানে ঢোকে, কিন্তু দুর্ভাগ্য শুধুমাত্র বিরক্তি নিয়েই সে বেরিয়ে আসে। দোকানে জল আছে কিন্তু এলাকায় load-shedding থাকার দরুন তা ঠাণ্ডা নয়। আজ যাত্রা শুরু করার পর থেকে কম করে দশ বার সে এইরকম বিরক্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হল । কিন্তু !! নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া এখন Rama Krishna-এর কিছুই করার নেই।
শেষমেশ দুপুর একটা নাগাদ তার গাড়ী Omarville গ্রামে পৌঁছল। গাড়ী গ্রামের রাস্তা ধরে যখন এগিয়ে যেতে থাকে Rama Krishna সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। তার মনে হয় গ্রামটা যেন সবুজ রঙের শাড়ী পরা একজন সুন্দরী মহিলা সেজে উঠেছে। সে কোকিলের ডাক শুনতে পায়। কিন্তু সে অনেক চেষ্টা করেও সে কাক ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না। এর পর গ্রামের রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে তার চোখ পড়ে একটা ছোট্ট আম গাছের ওপর। আমগাছ ভর্তি মুকুল ফলে আছে। এই সুন্দর মুকুলগুলো দেখে Rama Krishna-র ছোটবেলায় দেখা গ্রামের এক প্রবীণ Somuluর কথা মনে পড়ে যায় । Rama Krishna-র স্কুলে সে পিওন ছিল। তার কাজ ছিল স্কুলের ঘণ্টা বাজানো। তিনি একবার Rama Krishna কে বলেছিলেন 'কাউকে যদি সাপে কামড়ায় তখন এই মুকুল দু হাতের তালুতে ঘষে সেই ক্ষতের ওপর লাগিয়ে দিলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। এই কথা মনে পড়তেই Rama Krishna-র ভীষণ ইচ্ছা করল ছোটবেলার মত হাতের তালুতে মুকুল ঘসার। কিন্তু এখন সে আর ছোট নেই, আমেরিকার একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। তাই তাকে এসব মানায় না।
এই Omarville গ্রামটা তার মায়ের জন্মভূমি। তাছাড়া ছোটবেলার অনেকটা সময় সে এখানে কাটিয়েছে। মা কে শ্রদ্ধা জানাতেই এই গ্রামটি আজ সে অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারনেই তার এই গ্রামে আসা। আর তার আসার জন্যই গ্রামবাসীরা এখানে একটা ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ।
প্যান্ডেলের সামনে পৌঁছে Rama Krishna বেশ আশ্চর্যই হল । সে ভাবতেও পারেনি তাকে দেখতে আজ এত মানুষ ভীড় জমাবে । এ ভীড়ের মধ্যে থেকে কিছু মহিলা কর্পূরের প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে বরণ করে, কপালে লাল সিঁদুরের টীকা পরিয়ে দেয়। এই টীকা পরিয়ে তারা যে কি বিপত্তি করল ! কপাল থেকে সিঁদুরের গুঁড়ো পড়ল Rama Krishna-র গায়ে। তার এত দামী suit-এর ওপর সিঁদুরের দাগ যেন পরিষ্কার আকাশে কালো মেঘের মত লাগছে। দাঁতে দাঁত চিপে তার বিরক্তি দমিয়ে রাখে। এই সময় দুটো skirt পরা বাচ্চা মেয়ে ফুলের bouquet হাতে তাকে সংবর্ধনা জানায়। Rama Krishna-র তাদেরকে কোলে নিয়ে ছবি তোলার কথা মনে হয়। বেশ কিছুদিন আগে একটি খবরের কাগজে সে দেখেছিল Bill Clinton যখন Hyderabad -এর সফরে এসেছিলেন তখন যে দুটি মেয়ে তাকে ফুলের bouquet দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়েছিল তাদেরকে তিনি কোলে তুলে নিয়ে চুমু খেয়েছিলেন। এসব ভাবতে ভাবতেই তার নজর পড়ে মেয়ে দুটির জামার দিকে,পরমুহূর্তেই তার মন থেকে একটাই শব্দ বেরিয়ে এলো। ইসস !!! তবে কোলে না তুলে সে এক অর্থে ভালই করেছে কারণ mediaকে তো বিশ্বাস নেই। তারা হয়তো এই কোলে তোলার বিষয়টি নিয়েই gossip করবে। লিখবে "Randy Bill Clinton কে নকল করেছে ।" এখানকার খবরের কাগজগুলোর কাজই হল সস্তার খবর ছাপা।তাকে নিয়ে এইরকম সস্তার খবর বানানো হবে সেটা Randy মেনে নিতে পারবে না। তার চেয়ে একা ছবি তোলা ঢের ভালো। শুধু নোংরা পোশাকই নয় এখানকার মেয়েদের হাতে ছাপ করা মেহেন্দি দেখেও তার ভীষণ বিরক্ত লাগছিল।
সংবর্ধনার পর এলো ফিতে কাটার পালা। এইসময় বেশ কিছু reporter-রা এগিয়ে এলো তার ছবি তুলতে। সে নানান ভাবে pose দিয়ে ছবি তুলল । ছবি তোলা শেষ হতেই সে reporter দের সাথে অল্প কথায় জেনে নিল কোন কোন খবরের কাগজ থেকে তারা এসেছে। কারণ ভালো ভালো ছবিগুলো তাকে তো collect করতে হবে। হাজার হোক এত বড় একটা কাজ করছে সে।
এরপর তার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়ার আর রোগীদের ফল,মিষ্টি বিতরণ করার পালা।তার গাড়ি থেকে ফল,মিষ্টি বার করে যখন রোগীদের দেওয়া হচ্ছে তখন তাদের চোখের দিকে তাকালে বোঝাই যাচ্ছে এই ফল,মিষ্টি তাদের বহুকাল জোটেনি।কেউ কেউ আবার ফল,মিষ্টি পাওয়ার পরও হাতটা এমন ভাবে বাড়ালো যে বোঝাই গেলো তারা ডলার চাইছে।Randy এ সব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
এরপর কাজ সেরে Randy আবার প্যান্ডেলে ফিরে আসে। এইসময় সে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে জানালো আজ থেকে এই গ্রামটি সে অধিগ্রহণ করল।এটা মায়ের প্রতি তার স্রদ্ধাঞ্জলি।এই কথা শুনে গ্রামবাসীরা এতটাই উচ্ছ্বাসিত যে Randy মনে মনে হাসলো গ্রামবাসীদের মুর্খামি দেখে। তারা ভাবছে Randy এই গ্রামটাকে আমেরিকার New York আর Los Angeles এর মতো সাজিয়ে তুলবে।
এখানকার কাজ মিটিয়ে Rama Krishna গাড়িতে ওঠে।এখনও তার আরও একটা বড় কাজ বাকি আছে।কিন্তু তাকে গাড়িতে উঠতে দেখে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসে আর কিছু খেয়ে যেতে অনুরোধ করে। এখানে খাওয়ার কথা শুনেই সে আৎকে ওঠে।এই ভেজাল খাবার খেলে তাকে আর বেঁচে ফিরতে হবেনা। তাই খুব নম্রভাবে সবাইকে সে এরিয়ে যায়। কিন্তু সরল গ্রামবাসীরা ভাবে Rama Krishna উপোষ করে আছে, Arasavilli সূর্য মন্দিরে দর্শন সেরেই সে খাবার খাবে। ভাগ্যিস ওরা আসল কারণটা জানতে পারছেনা।অথচ গ্রামবাসীরা যখন তাকে ডাবের জল খেতে দিল,সে আর আপত্তি করলনা। দ্বিতীয়বার বলার আগেই সে ডাবটা হাতে নিল আর নিমেষের মধ্যে জল টা শেষ করলো।উফ...এতক্ষণে প্রাণটা জুড়ল । সেই গাড়িতে তেষ্টা পেয়েছিল। তাছাড়া ডাবের জলে তো দূষণ এর ভয় নেই। কিন্তু একটা ডাব খাওয়ার পরও যখন তেষ্টা মিটলোনা সে ভাবলো আর একটা চাইবে,তারপর ভাবল থাক। এবার রওনা দিল।
যাওয়ার পথে Randy রাস্তার পাশের দোকানে গ্রীনগ্রাম কেক ভাজার গন্ধ পায়। ছোটবেলায় সে মামার কাছে এই কেক খাওয়ার কতই না বায়না করেছে। আর মামা খুশি খুশি তাকে কোলে নিয়ে এই সব দোকানে এসে তাকে পেট ভরে গ্রীনগ্রাম কেক খাইয়েছে।আবার কেক খেতে খেতে Rama র ভীষম লাগলে মামা তাকে নিকেলের গ্লাসে জলও খাইয়ে দিয়েছে। তারপর মামা তাকে কোলে নিয়ে চুমু খেতে খেতে বাড়ী নিয়ে নিয়ে গেছে।
পুরনো কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ Randy র ঘড়ির দিকে নজর পড়ে। ইস বেশ দেরী হয়ে গেছে। সে Driver কে সময়ের ব্যাপারটা জানাতেই সে ও গাড়ির speed বাড়িয়ে দিল। গাড়ির জোরে চলতে দেখে তার মনে হয় যেন পাহাড়ি রাস্তা ধরে একটা সাপ ছুটে চলেছে। তবে গাড়ি জোরে ছুটিয়ে সে হয়তো সময় মত ব্যাঙ্কে পৌঁছে যাবে কিন্তু সেখানে পৌঁছে সে শুধু হতাশই হবে। একজন সাধারণ স্কুল শিক্ষকের পক্ষে ব্যাঙ্কের লকারে কিই বা রাখা সম্ভব। থাকলে হয়তো থাকবে তার ঠাকুরমার পায়ের রুপোর মল নয়তো ঠাকুরদার নস্যির কৌটো এছাড়া কোন হিরের গয়না তো আর থাকবেনা।
শেষপর্যন্ত Driver এর দৌলতে Randy সময়মত ব্যাঙ্কে পৌঁছলো। একসময় এই ব্যাঙ্কে বাবার আর তার account ছিল। কিন্তু আজ সে ওই account থেকে টাকা তুলতে নয়,বাবার লকারটা খুলতে এসেছে।শেষবার Randy র শ্বশুর বাড়ির লোকজন যখন তাদের সাথে দেখা করতে আমেরিকায় যায় তখন বাবা তাদের হাতে একটা প্যাকেট Randy র কাছে পাঠায়,তাতেই এই লকারের চাবি ছিল। লকারটা খুলে Randy শুধু হতাশই নয় বিরক্ত ও হল। লকারে ছিল বাড়ির দলিল,একটা ডাইরী,রুমালে বাঁধা কিছু ডলার আর সবচেয়ে হাস্যকর একটা হাতির দাঁতের চিরুনী। সে বুঝতে পারলো না বাবা এটা কেন লকারে রেখেছে,এটা কি লকারে রাখার মত জিনিস ? এর মধ্যে দরকারি জিনিস মাত্র দুটো এক দলিল আর রুমালে বাঁধা ডলারগুলো।এই ডলার গুলো সে বাবাকে রুমালে বেঁধে পাঠিয়েছিল খরচ করার জন্য। কিন্তু বাবা সেই টাকাগুলো খরচ করেনি কেন? ডলারগুলোতে আমেরিকার তখনকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের ছবি ছাপা আছে।
তার বাবা Ankalam Appa Rao ছিলেন এই গ্রামের একজন আদর্শবান শিক্ষক। তার সমস্ত প্রাক্তন ছাত্ররা আজ সবাই সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাই ছেলে Rama Krishna ও যে উন্নতি করবে তা তো নিশ্চিতই ছিল। মেধাবী ছাত্র Rama ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেই একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরীও পেয়ে যায়। চাকরী পাওয়া মাত্রই বাড়ির সামনে আইবুড়ো মেয়ের বাবা মায়েদের লাইন পড়ে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে একজনেরই ভাগ্যই শেষ হাসি হাসে। আর সেই হাসি হাসলো পুলিশ কমিশনার Kanaka Rao। তিনি বাকি সবাইকে পেছনে ফেলে Rama Krishnaকে তার জামাই হিসাবে পেলেন। বেসরকারি ফার্মে চাকরী,পুলিশ কমিশনার শ্বশুর,সুন্দরী বউ,শ্বশুরমশাই এর দেওয়া দোতলা বাড়ী এত কিছু পেয়েও Rama Krishna সন্তুষ্ট হতে পারলোনা। সে চাইতো যে কোন উপায় সাফল্যের চূড়ায় পৌছতে। আর সেই তাগিদ তাকে সারাক্ষণ তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতো। সাফল্যের চূড়ায় পৌছতে গেলে তাকে যদি কোন আপনজনের দেহের ওপর দিয়েও যেতে হয় তাতেও তার কোন আপত্তি নেই। ছোটবেলা থেকেই Rama Krishna র বাবা তার খাওয়া পরা,পড়াশোনা আর সমস্ত খরচ বহন করে গেছেন। তাই তিনি নিজের সব সাচ্ছ্যন্দ বর্জন করেন। Rama চাইতো তার বাবা হিন্দি সিনেমার হিরোদের মত – Pyjama আর Lalchi পরুক। কিন্তু Appa Rao সারাজীবন Dhoti আর torn Banian পরেই কাটিয়ে দিলেন। ছেলের সব চাহিদা পূরণ করা সত্বেও Rama তাকে একটা বাজে শবদাহের গাড়ি ছাড়া কিছুই ভাবতে পারতোনা।
হঠাৎ ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের ডাকে চমকায় Rama । ম্যানেজার জানান তাদের strong room বন্ধ করার সময় হয়ে গেছে। সম্বিৎ ফিরতেই Randy ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে যেতে গেলে ম্যানেজার আবার তাকে জানান ব্যাঙ্কের অন্য dipertment গুলো খোলা আছে। Randy বোঝে ম্যানেজার চাইছে সে যেন এই ব্যাঙ্কে একটা fixed diposit করে।কিন্তু সে কোন উত্তর না দিয়েই ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসে।
গাড়িতে বসেই লকারের জিনিস গুলো Rama Krishna তার briefcase এ রাখে। গাড়ি চলতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর Rama পকেট থেকে সেই চিরুনীটা বের করে আর তার মনে এই একটা সাধারণ চিরুনীও বাবা কেন লকারে তুলে রেখেছিল। কি এমন আছে এই চিরুনীটায়। চিরুনীটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে তার বহুদিন আগের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়।
ওই দিন সকালে থানা থেকে একটা ফোন পেয়েই Rama Krishna আঁতকে ওঠে। সে জানতে পারে তার বাবাকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়ছে । খবরটা শুনেই Rama থানায় ছোটে। রোজ সকালে Appa Rao এর হাঁটতে যাওয়ার অভ্যাস ছিল। আজও গেছিলেন। কিন্তু রাস্তায় কি এমন ঘটলো যে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। থানায় পৌঁছে হতবাক Rama । Appa Rao সকালে একটা রাস্তার ধারের একটা ড্রেনের ভেতর হাত ঢুকিয়ে কিছু টানাটানি করছিলেন। তখন থানার অফিসার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোন উত্তর দেননা। তাই তাকে থানায় ধরে নিয়ে আসা হয়। বাবার এই ধরনের আচরণে বিরক্ত হয় Rama যেহেতু প্রয়োজন ছাড়া সে বাবার সাথে একটাও কথা বলতোনা, তাই কোন জবাবদিহি ছাড়াই সে বাবাকে বাড়ী নিয়ে আসলো। বাড়ী ফিরে মাকে সে সব জানালো এবং বাবার আচরণের জন্য বিরক্ত প্রকাশ করলে মা উলটে বাবারই পক্ষ অবলম্বন করলো।
কিছুটা সময় কাটার পর Rama Krishnaর একটা ব্যাপার মনে পড়ে গেল। অনেকদিন আগের ঘটনা। আমেরিকায় চাকরীর বাজার ভালো থাকায় এদেশের অনেক ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার সে দেশে পারি দেয়। Rama Krishnaর দুজন বন্ধুও California চাকরীরত ছিল। তারা যখনই এই দেশে ছুটি কাটাতে আসতো,Rama তাদেরকে নিজের বাড়িতে থাকাতে বলতো। এমনি এক সময় ওই দুই বন্ধু ছুটি কাটাতে এসে Rama ও তার পরিবারকে ফাইভ স্টার হোটেলে ‘treat’দেয়। সেইদিন lunch সেরে হোটেল থেকে বেড়তেই Appa Rao পকেট থেকে সেই হাতির দাঁতের তৈরি চিরুনীটা বার করে Ramaকে চুলটা আঁচড়ে নিতে বলে। কিন্তু বিরক্ত Rama বাঁ হাত দিয়ে এমন ঝাপটা মারে যে চিরুনীটি Appa Rao এর হাত থেকে ড্রেনে পড়ে যায়।
ছোট থেকেই Rama দেখেছে বাবার এই চিরুনী দিয়েই চুল আঁচড়াতেন। আর তার ধারণা ছিল এই চিরুনী দিয়ে চুল আঁচড়ালে তা ঘন আর কালো হয়।সেক্ষেত্রে তার প্রমাণ তিনি নিজেই। এত বয়সেও তার চুল একই রকম ঘন আর কালো ছিল। অথচ Rama Krishnaর চুল ছিল খুব পাতলা। তাই Appa Rao স্ত্রীকে ঠাট্টা করে বলতেনRama আমার ছেলে হলেও,তার চুলটা মামার বাড়ির মতো হয়ছে। কিন্তু মা এই কথা শুনে খুব রেগে যেতেন। তবে Rama Krishna বুঝতে পারেনা ,কি মাহাত্য আছে এই চিরুনীর যে Appa Rao কে পাগলামোর করার জন্য থানায় যেতে হলো। এই চিরুনী তো Odishaর Parlakhemidi তে তৈরি হয়। অথচ চিরুনীটা হাতে ধরে থাকতে থাকতে তার মনে হল সে যেন তার বাবার হাতটা ধরে আছে। হঠাৎ সে অনুভব করলো তার ঔদ্ধত্য যেন অনেকটাই প্রশমিত হয়ছে।
আজ সে বোঝে বাবা কত কষ্ট করে তাকে বড় করেছেন, লেখাপড়া শিখিয়েছেন। একজন সাধারণ শিক্ষকের পক্ষে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো সত্যিই অসাধ্য সাধন। Rama Krishnaর মনে পড়ে যায় student থাকাকালীন তাকে একবার কেরালায় study tourএ যেতে হয়েছিল। tour থেকে ফিরে সে দেখে মায়ের গলায় মঙ্গলসূত্রটা নেই। এইদিনটার কথা মনে পড়তেই Rama Krishna কেঁপে উঠলো। ভীষণ কষ্টে তার চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এলো। ডান হাতের দুটো আঙুল দিয়ে সে চোখ মুছলো। কি আশ্চর্য...তার মত কসাইয়ের চোখে জল। নিজেকে সামলে নেয় Rama ।
এই বাবা মাকে ছেড়ে একদিন সে আমেরিকায় পারি দিয়েছিল আরও টাকা আরও সাফল্য পেতে। সেখানে সে, Rama Krishna থেকে Randy হয়ে যায়। তাতে কি? প্রচুর টাকা,একটা বড় বাংলোর মালিক হয়েছে সে । এই সময় তার জীবনে আরও একটা শুভদিন আসে।সে বাবা হয়। সেই নবজাতককে দেখতে Rama র শ্বশুর,শ্বাশুড়ি ৬ মাসের জন্য আমেরিকায় যায়। কিন্তু তার বাবা মা আসেনা। সে বাবা মাকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে চাইলে মা রাজী হলেও বাবা যেতে চায়না । ছেলের বাড়িতে বাবা মা আসেনা,অথচ শ্বশুর,শ্বাশুড়ি আসে। এসব লক্ষ্য করে আমেরিকায় Randy র প্রতিবেশীরা প্রশ্ন করলে নিরুপায় Randyর তাদের মিথ্যে বলা ছাড়া উপায় থাকেনা।
মায়ের মৃত্যুর পর সবাই ভেবেছিল এবার হয়তো Rama Krishna ভারতে থেকে যাবে,কিন্তু মায়ের শ্রাদ্ধ্যানুষ্ঠানের কাজ মিটিয়ে সে যখন বাবাকে নিয়ে আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করলো তখনও বাবা যেতে রাজী হলনা। বাবার এই আচরণে বিরক্ত Rama Krishna আর কোনদিন বাবার খোঁজ নিলনা। অথচ আমেরিকায় বসবাসকারী তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজনেরা যখন ওদেশে নিজেদের নববর্ষ পালন করতো তখন প্রত্যেকের আত্মীয়স্বজন সবাই আমেরিকায় আসতো। সেইসময় RamaKrishnaও মন বাবা মাকে দেখার জন্য ছটফট করতো। ওখানে যখন সব লোকেরা খাদির ধুতি,লালচি আর মহিলারা শিল্কের শাড়ি পরতো তখন Ramaর একাকী খুব কষ্ট পেত। এত টাকার মালিক হয়েও আজ সে ভীষণ একা। তার বউ সারাদিন নিজের জগৎ নিয়ে ব্যস্ত। Rama Krishna বুঝতে পারতো তার স্বজাতির লোকজনেরা আড়ালে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে। বাবা মার কাছে থাকলে আজ তার এই অবস্থা হতোনা। সে ভাবে যে ভাবেই হোক বাবা মায়ের ঋণ শোধ করতে হবে।
পুরনো কথা ভাবতে ভাবতে সে এতই মগ্ন হয়ে যায় কখন তার গাড়ি হোটেলের সামনে পৌঁছেছে সে বুঝতেও পারেনা। ড্রাইভারের ডাকে তার সম্বিৎ ফেরে। সে ভাবতেই পারেনা এত তাড়াতাড়ি ভাইজ্যাক পৌঁছে যাবে। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত এই হোটেলটা যেন তার অভ্যর্থনার জন্যই দাঁড়িয়ে আছে।
সূর্য ডুবে গেছে। আকাশে তারা ঝলমল করছে। কিন্তু চাঁদ ফিকে হয়ে আছে। পূর্ণিমা বা অমাবস্যার রাতে জোয়ার আসলে সমুদ্র যেমন উত্তাল হয়ে ওঠে,আজ তেমন নয় সমুদ্র একেবারে শান্ত। পারের কাছে নোঙর করা জাহাজগুলো অল্প দুলছে। হোটেলের Air condition ঘরে বসে Rama Krishna একটা whiskyর বোতল খোলে। এটাও সে আমেরিকা থেকে এনেছে। বলা তো যায়না এখানকার অন্যান্য খাওয়ার জিনিসের মত মদেতেও ভেজাল থাকতে পারে। একটা চুমুক দিয়ে সে লকার থেকে আনা ডাইরীটা খোলে। বাবার হাতের লেখা খুব সুন্দর আর ঝকঝকে ছিল। তবে বাবা সবার মত কখনও প্রাত্যহিক ঘটনা ডাইরীতে লিখতেন না। তিনি জীবনের বিশেষ মুহূর্তগুলো লিখে রাখতেন।
ডাইরী পড়া শেষ। মদের বোতলও প্রায় খালি। কিন্তু আজ এই এক বোতল মদও তাকে মাতাল করতে পারলোনা। আজ ডাইরীর পাতা থেকে Rama যে কাহিনী জানতে পারলো,তাতে তার সমস্ত নেশাটাই কাটিয়ে দিল।
পরদিন Andhra-Odisha র বর্ডার। Rama রাস্তার ধারের একটা দোকান থেকে কেক কিনে খেলো। আজ এদেশের ভেজাল যুক্ত জল,খাবার তাকে আর বিব্রত করছেনা।একটা রাতের মধ্যে তার এই পরিবর্তন ড্রাইভারেরও নজর এড়ালোনা।
শেষপর্যন্ত তারা এসে পৌঁছল Parlakhmundi.র একটা জীর্ণ টালির বাড়ির সামনে। বাবার ডাইরী থেকে সে যতটুকু জেনেছে তাতে এই গ্রামের Palace street এর Ranjit Maharanaর প্রতিবেশী হয়েই Appa Raoএর থাকার কথা। Ramaর মনে পড়ে যায় Parlakhmundi র এই বাড়ির বারান্দায় একসময় ষাঁড়ের সিং দিয়ে তৈরি সারস,বাঁদর,মাছ,হাতি,মাথায় কলসি নিয়ে মহিলাদের পুতুল বিক্রি হতো। এখন সেইরকম অনেক পুতুল কাঁচের আলমারিতে তুলে রাখা আছে। এখন এই বাড়িতে শুধু Ranjit Maharana ই থাকেন। তার বাকি ভাই বোনেরা সব বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে। Rama Krishna কে দেখে একজন লোক এগিয়ে আসে। সে হয়তো ভাবছে Rama এখানে পুতুল কিনতে এসেছে।Ramaও ওইলোক তাকে দেখে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো "এটা কি Ranjit Maharanaর বাড়ী ।" তার কথা শুনে লোকটি নিজের উত্তেজনা চাপতে পারেনা।হতবাকও হয় এই ভেবে যে পুতুল তৈরি করে সে এতটাই বিখ্যাত হয়ে গেছে আজ এত বড় গাড়ি করে একজন ভদ্রলোক এসেছেন তার পুতুল কিনতে। তিনি আনন্দ মিশ্রিত সম্মতিক্রমে জানালেন "হ্যাঁ হ্যাঁ এটিই সেই বাড়ী।" Rama Krishna জানতে চায় " তার বাবা কি এখানে থাকেন?" Ranjit Maharana বলেন "হ্যাঁ তিনি এখানেই আছেন।" Rama এই কথা শোনার পর নিজের উত্তেজনা চাপতে পারেনা দরজার সামনেই জোরে "বাবা বাবা" বলে চেঁচিয়ে ওঠে।
এতক্ষণে Ranjit Maharana র কাছে পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেলো। সে বুঝতে পারে এই ভদ্রলোক আসলে কে?তার মনে হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার বাল্যবন্ধু কুচেলার সাথে দেখা করতে এসেছে। Rama আর সময় নষ্ট করতে চায়না।দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে যায় কিন্তু ছাদটা নীচু থাকায় তার মাথা খুব জোরে ঠুকে যায়। Rama র মনে পড়ে যায় ছোটবেলায় সে যখন মাথা উঁচু করে হাটতো বড়রা তাকে বলতো "মাথা নীচু করে চলো না হলে ঠুকে যাবে।" Rama Krishnaর কথাটা মনে পড়তেই সে মাথা নীচু করে ঘরের ভিতর ঢোকে। সে দেখে বাবা একটা খাটিয়ার ওপর শুয়ে আছে। সে 'বাবা' বলে ডাকতেই Appa Rao উঠে বসে হাত দিয়ে চোখ ঢেকে Rama কে দেখলেন। আবেগে Appa Rao এর চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। Rama Krishna বলে "বাবা আমি চলে এসেছি।আর কোনদিন তোমায় ছেড়ে যাবোনা।" এই সব দেখে Maharanaর ছেলেরা একেবারে হতবাক। এই লোকটাও এখন থেকে এখানেই থাকবে। তাদের কৌতুহলী নজর খালি জানতে চায় 'এই লোকটি কে? একেবারে হুবহু বাবার মতো দেখতে।' বাবাকেও এইরকম suite boot পরিয়ে দিলে দুজনের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যাবে।
বহুদিন আগের ক্থা। সেবছর গরমকালে Appa Rao মাষ্টার স্ত্রীকে নিয়ে তার বাল্যবন্ধু Chinna Maharana র সাথে দেখা করতে আসে। একদিকে অনেক সন্তান নিয়ে Chinnaর বড় পরিবার। উলটো দিকে Appa Rao নিঃসন্তান। Chinnaর স্ত্রী সেইসময় আবার এক নবজাতকের জন্ম দেয়। কিন্তু জন্ম দেওয়ার পর Chinnaর স্ত্রী বাচ্চাটিকে সামলে উঠতে পারেনা। অথচ সেইসময় বাচ্চাটির বিশেষ দেখাশোনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন Appa Rao এর স্ত্রী বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নেয়। নিঃসন্তান দম্পতি্ এই শিশুটিকে দত্তক নেয়।
এই Chinna Maharana র হাতের কাজ ছিল অসাধারণ ।তিনি ষাঁড়ের শিং দিয়ে পুতুল বানিয়ে বিক্রি করতেন। তার হাতের জাদুতে ছেনির আওয়াজ শুরু হওয়া মাত্রই শিং গুলো যেন আপনা হতেই পুতুলের আকার নিয়ে নিত। বিদেশের বড় বড় হটেলে রাখার জন্য তার পুতুল রপ্তানী করা হতো। Rama Krishnaকে দত্তক দেওয়ার সময় Chinna Maharana কিছু পুতুল আর হাতির দাঁতের তৈরি একটা চিরুনী দিয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল Ramaর চুলটা যেন ওই চিরুনী দিয়েই আঁচড়ে দেওয়া হয়। এটা করা হলে তার মনে হবে যেন সেই তার ছেলের চুল আঁচড়ে দিচ্ছে। Appa Rao দেখলেন এটা তো কোন শক্ত ব্যাপার নয়। তাছাড়া এই চিরুনী দিয়ে আঁচড়ালে চুলে খুস্কি বা উকুন বাসা বাঁধতে পারেনা। তাই তিনি Chinna কেএই অনুরোধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। Rama এখন তার জীবনে এই চিরুনীর গুরুত্ব অনুভব করে। এখনও কেউ জানেনা যে Appa Raoএর ডাইরী সে পড়েছে। সে বুঝতে পারে এই চিরুনীটা তাকে সমস্ত বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে। সে বোঝে চিরুনীটা ব্যবহার করলে তার মন থেকে গর্ব,দম্ভ,অহংকার নিমেষে উধাও হয়ে গিয়ে বিনম্রতা,ভদ্রতা সব জেগে ওঠে। এই চিরুনীটা আজও এতই শক্ত যে এখনও সেটার একটা দাঁতও ভাঙেনি।
নিজের দেশে থাকার মনস্থির করেই Rama Krishna Vizag এ মায়ের স্মৃতিতে Sundaram’নামে একটা software company খোলে।Rama Krishnaর ছোট মেয়ে তার দাদুকে খুব ভালবাসে আর দাদুও তাকে ভালবেসে Chinna বলে ডাকে। Amarville শহরটা আজ Rama Krishnaর জন্য আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একসময় এখানকার সব ছেলেরা চাকরীর জন্য বিদেশে পারি দিত। কিন্তু এখন বাইরে থাকা সব ছেলেরা দেশে ফিরে আসে। এই বছর Republic Day তে এখানকার Governor Rama Krishnaকে পুরস্কৃত করেন। আমেরিকায় বসবাসকারী তেলেগু সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিওতাবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে Rama Krishnaর স্লোগান ছিল 'Matru Runam Teerchuko।’ এই স্লোগান অন্ধ্রপ্রদেশে মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
Vizag এ বীচ রোডের ওপর একটা দোকান খোলা হয়। নাম দেওয়া হয় চিরুনীটি(The Comb’)। এই নামটি সুন্দর করে একটা হোডিং এ লেখা আছে আর তার পাশে আঁকা আছে হাতির দাঁতের তৈরি চিরুনীর ছবি। Ranjit Maharana র এই দোকানে হাতে তৈরি নানান জিনিস পাওয়া যায়। তার মধ্যে হাতির দাঁতের তৈরি চিরুনী,ষাঁড়ের শিং দিয়ে তৈরি নানান পুতুল।দোকানটা অল্প দিনের মধ্যে Tourists দের কাছে খুব জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় হয়ে যায়। এত সুন্দর হাতের কাজের জিনিস আর কোথাও পাওয়া যেতনা। কিছুদিন পরেই বিদেশ থেকেও অর্ডার আসতে শুরু করে।
এখন Rama Krishna ভালোবাসা আর সম্মান দিয়ে বাবাকে খুব যত্নে রেখেছে।।Rama Krishnaর ছোট মেয়ে তার দাদুকে খুব ভালবাসে আর দাদুও তাকে ভালবেসে Chinna বলে ডাকে।Appa Rao এখন খুব ভালো আছে ।